Dev Skill
House # 184 (8th Floor),Senpara Parbata
Begum Rokeya Sarani, Mirpur-10
Dhaka 1216, Bangladesh
Open in Google Maps +8801777818008 info@devskill.com Contact Us
আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে লক্ষ্য না থাকা কিংবা ছোট লক্ষ্য। আমার কাছে এটাকে গোঁড়ায় গলদ মনে হয়। অনেকেই জানে না তারা কেন কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হয়েছে। আবার অনেকে জানে না তারা জীবনে কি অর্জন করতে চায়। এভবে চললে সফলতার ধারেকাছেও পৌঁছা যাবে না। তাই প্রথমে ঠিক করতে হবে – আমি জীবনে কি করতে চাই, কি হতে চাই। এক্ষেত্রে বড় স্বপ্ন দেখাই আমি ঠিক মনে করি, কিন্তু নিজের স্বপ্নটা নিজেকে ১০০% বিশ্বাস করতে হবে এবং সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা যখন চিন্তা করি যে আমি একটা ভালো চাকরী পেলেই খুশি, তখন আমাদের কাছে ভালো চাকরীই সবচেয়ে কঠিন বস্তু হয়ে যায়। যখন ভাবি, ভালো একটা সিজিপিএ পেলেই খুশি, তখন ভালো সিজিপিএ তোলাই এভারেস্টে ওঠার মত কঠিন হয়ে যায়। কারণ তখন এই লক্ষ্যটাই আপনার পৃথিবীর শেষ সীমানা আর আপনি সে গতিতেই চলতে থাকেন। তাই কোন লক্ষ্য না থাকাটা সবচেয়ে বড় ভুল, আর ছোট লক্ষ্য থাকা ২য় বড় ভুল।
এরপর আমাদের জীবন থেকে বদ অভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত বন্ধুপ্রীতি, ফেসবুক, গেমস, ঘোরাঘুরি এসব করে সময় অপচয় করলে সফলতা আসলে আসবে না। একটা কথা আমরা বুঝতে পারি না যে যখন আমি পিছিয়ে পরবো তখন এগুলোর কোনটাই আমার কথা মনে রাখবে না। আমাকে একলা ফেলে সবাই যারযার জীবন নিয়ে চলে যাবে। যখন আমি সময় নষ্ট করা বন্ধ করতে পারব, তখন অন্যদের থেকে এগিয়ে যাওয়া ডালভাত ব্যাপার হয়ে যাবে।
আরেকটি বিষয় হল, অনেকে বিভ্রান্ত হয় কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং করা উচিৎ নাকি, সফটওয়্যার ডেভেলপমেনট করা উচিৎ। আসলে দুটোই করতে হবে এবং আমি নিজেও তাই করেছি। এটা আমাকে এমন কিছু সুবিধা দিয়েছে যা অত্যন্ত মূল্যবান। অনেকে মনে করেন কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং শুধু তাদের জন্য যারা রিসার্চ করবে বা গুগল, মাইক্রোসফটে চাকরী করবে। এটা একদম ঠিক নয়। প্রবলেম সলভ করা ও সুদূরপ্রসারী চিন্তাশক্তি জীবনের সবক্ষেত্রে কাজে লাগে, আর এলগরিদম প্রোগ্রামিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যদের থেকে আলাদা কিছু করতে হলে এগুলো অনেক কাজে লাগে। যারা একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে একমাত্র অবলম্বন মনে করে, তারাই ক্যারিয়ারে সমস্যায় পরে। আমি দেখি যারা কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং করে, তারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংকে হেলাফেলা করে, মনে করে ওটা শিখতে আবার কিছু লাগে নাকি। কিন্তু এলগরিদম পুরো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ১০% মাত্র। আসলে ভুলটা হল সফটওয়্যার বানানো আর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংকে এক জিনিষ মনে করা। যারা সফটওয়্যার বানানো নিয়ে ব্যাস্ত, তারা আবার ভুলে যায়, ভাল এলগরিদমের জ্ঞান না থাকলে মূল্যবান সফটওয়্যার বানানো কঠিন, কারণ সহজ কাজ সবাই করতে পারে।
সবশেষে, অনেক বই পড়তে হবে, অনেক ট্রেনিং করতে হবে, অনেক কোড করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ সব কিছুতেই টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু নিজেকে উন্নত করতে টাকা খরচ করতে চায় না। একটা বই কিনতে গেলে, বা ট্রেনিং করতে গেলে চিন্তা করে, অযথা কতগুলো টাকা নষ্ট হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে সবার জন্যই ২৪ ঘণ্টায় দিন। অন্যকারো অভিজ্ঞতা টাকা দিয়ে কিনে নেয়ার চেয়ে বড় টাইম মেশিন আর কিছু হতে পারে না। একটা মানুষ অনেক ভুল করে, সময় নষ্ট করে যা শিখেছে, আমি যদি সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে তা জানতে পারি, তাহলে আমি আমার জীবনে এগিয়ে যাবো। সমস্যা হল, আমরা হিসাব ভালো করতে জানিনা, তাই বুঝতে পারি না, যদি ২০,০০০ টাকা খরচ করে আমি জীবনে ২,০০,০০০ টাকা বেশি আয় করতে পারি, তাহলে এটাই অনেক বড় লাভ। নিজেকে প্রতিনিয়ত উন্নত না করলে, সবাই এগিয়ে যাবে, আর আমি পিছনে একই জায়গায় পরে থাকব। এখনকার যুগে প্রযুক্তির উন্নতির কারনে, সবাই খুব কঠিন প্রতিযোগী। একটা চাকরীর জন্য ১০০+ জন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে যতটা সম্ভব উন্নত করতে হবে, এবং তা করতে হবে স্বল্প সময়ে।
লিস্ট করলে দারায়-
১) জীবনের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে এবং লক্ষ্য/স্বপ্ন বড় হতে হবে ও সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
২) সময় নষ্ট করা বন্ধ করতে হবে। ফেসবুক, আড্ডা, টিভি, সিনেমা, গেমস এ সময় নষ্ট করা একদমই কমিয়ে ফেলতে হবে।
৩) এলগরিদম, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং দুটোই শিখতে হবে। নিজেকে একপেশে করলেই বিপদ।
৪) নিজেকে উন্নত করার জন্য টাকা খরচ করতে হবে। এটা একটা ইনভেস্টমেন্ট, যা আপনাকে সবচেয়ে বেশি প্রফিট দেবে। তাই যত পারেন বই পড়ুন, ট্রেনিং করুন।
৫) প্রচুর কোড করতে হবে। এটা সবাই বলে, তাই আমি আর তেমন আলাদা করে বলিনি। কিন্তু ক্ষুধা লাগলে যেমন খাবারই খেতে হয়, তেমন প্রোগ্রামারকে কোডই করতে হয়। তাই অনেক কোডিং প্র্যাকটিস করার কোন বিকল্প নেই।
মোঃ জালাল উদ্দিন,
প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, ডেভস্কিল.কম