Go Back to All Articles আপনি কেন এখনই ক্লাউড কম্পিউটিং শিখার বিষয়ে আগ্রহী হবেন

আমি আজকে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করতে চাই যে আপনি কেন এখনই ক্লাউড কম্পিউটিং শিখার বিষয়ে আগ্রহী হবেন।

মূলত ক্লাউড কম্পিউটিং কোন আলাদা ধরণের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নয়। ওয়েব, ডেস্কটপ, মোবাইল এপ এর সব কিছুই ক্লাউড কম্পিউটিং এর উপর নির্ভর করতে পারে। অর্থাৎ আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করেন যেটা ক্লাউড প্লাটফর্মনে চলে তাহলেই হল। তারমানে আপনি যে ধরণের প্রোগ্রামিংই ক্যারিয়ার হিসাবে বেছে নেন না কেন, ক্লাউড কম্পিউটিং আপনার প্রয়োজন হতে পারে।

বর্তমান বিশ্বে ক্লাউড কম্পিউটিং সাপোর্ট করে এমন সফটওয়্যার এর চাহিদা বেশি। বড় বড় কোম্পানিগুলো দামি সফটওয়্যারগুলো ক্লাউড নির্ভর করে তৈরি করে। যেমন আমরা যে ফেসবুক, গুগল, জিমেইল, ইয়াহু, হটমেইল ব্যাবহার করি এগুলো সবই ক্লাউড নির্ভর সফটওয়্যার। প্রতিদিন আমরা ফ্রিতে যত সফটওয়্যার ব্যাবহার করে থাকি তার বেশিরভাগ ক্লাউড নির্ভর। তারপরও এই কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা আয় করে। কিভাবে করে সেটা অবশ্য এখানে আলোচ্য বিষয় নয়, তবে ক্লাউড এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি এই সফটওয়্যারগুলো ক্লাউডে না চলত তাহলে তারা এভাবে ফ্রি সার্ভিস দিয়ে এত টাকা আয় করতে পারতো না। কাজেই এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারলে আপনার যে অনেক সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে সেটা পরিষ্কার।

এবার আসা যাক আপনি কেন এখনই ক্লাউড কম্পিউটিং শিখার বিষয়ে আগ্রহী হবেন।

১) আপনি যদি শিক্ষার্থী হন, তাহলে লেখাপড়া শেষে আপনি সম্ভবত চাকরি খুজবেন। আর তখন আপনি সিভি লিখতে বসবেন। একবার চিন্তা করুন সিভিতে আপনি কি লিখবেন যেটা আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করতে পারে, আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে পারে? আমি দেখেছি শতকরা ৯৯.৯৯% শিক্ষার্থীর সিভি ফরম্যাট একই রকম। তাদের আলাদা করা খুবই কঠিন হয়ে পারে। কিন্তু আবার শতকরা ৯৯.৯৯% এরই সিভিতে ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে কোন দক্ষতার কথা উল্লেখ থাকতে দেখিনি। সত্যি বলতে আমি ১০০% ফ্রেসার সিভিতেই এটি দেখি না। আপনি যাচাই করতে চাইলে আপনার বন্ধুদের সিভি চেক করে দেখতে পারেন।

এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের একদমই লেখার মত কোন জ্ঞান থাকে না। তারা এমনকি ভুল লিখে ইন্টারভিউতে প্রশ্নের মুখে পরার ভয়ে বানিয়েও এই বিষয়ে কিছু লিখতে ভয় পায়। অনেকে না জেনেও সিভিতে অনেক কিছু লেখে কিন্তু এই বিষয়ে তাদের ধারণা এতই অপরিষ্কার যে এই বিষয়ে চালাকি করাও তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পারে। এখন চিন্তা করে দেখুন যদি আপনি ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন, তাহলে সিভিতে ও ইন্টার্ভিউতে আপনার কথা বলার ও ইম্প্রেস করার কতো বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। আপনি কি এমন আর কিছু চিন্তা করতে পারছেন যেটা এই পরিমাণ সুযোগ তৈরি করতে পারে আপনার জন্য? আপনার প্রথম চাকরির জন্য তাই আপনি এখনই প্রস্তুত হতে পারেন ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে।

২) আপনি যদি ইতিমধ্যে জবে জয়েন করে থাকেন, হয়ত ২-৩ বছর পার করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। প্রতিবছর আপনি আশা করে থাকেন যে আপনার সেলারি বাড়বে। হয়ত কিছু বাড়েও, কিন্তু অনেক সময় হয়ত বাড়ে না। তখন আপনি হয়ত আরও ভালো সুযোগের সন্ধানে থাকেন। জব পরিবর্তন করার কথা চিন্তা করেন। কিন্তু আবার ইন্টার্ভিউ দিতে হবে, অভিজ্ঞ হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে এই সব চিন্তা করে চুপসে যান।

আমাদের দেশে ভালো মানের সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে কাজ করে থাকে। তাই তারা খুব আগ্রহী হতে পারে যদি তারা দেখে যে আপনি এই বিষয়ে দক্ষতা রাখেন। আপনার জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে যেতে পারে অনেক ভালো কোম্পানিতে কাজ করার। আর আপনার বর্তমান কোম্পানিও কিন্তু আপনাকে অনেক কদর করতে পারে যদি তারা বুঝতে পারে যে আপনি এমন বিষয়ে দক্ষ যেটা অফিসে আর কেউ জানে না বা পারে না। নতুন ও উন্নতমানের ক্লায়েন্ট জোগাড় করার ক্ষেত্রে যদি আপনি সহায়তা করতে পারেন, তাহলে কোম্পানি আপনাকে অবশ্যই কদর করবে।

৩) আপনি যদি উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে ক্লাউড কম্পিউটিং আপনার জন্য অবশ্যই আবশ্যক। আপনি যদি ভালো মানের ক্লায়েন্ট পেতে চান যারা আপনাকে মোটা অংকে টাকা দিবে তাহলে আপনাকে অবশ্যই ক্লাউড কম্পিউটিং এর উপর নির্ভর করে সার্ভিস দিতে হবে। বাংলাদেশে অনেক সফটওয়্যার কোম্পানি অল্প টাকায় কাজ করে কোন রকমে টিকে থাকে কিন্তু যারা ক্লাউড নিয়ে কাজ করে তারা সবাই খুব জৌলুসের সাথেই ব্যবসা করছে, এটা আপনি নিজেই খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

আমাদের দেশে ক্লাউড কম্পিউটিং নতুন হতে পারে কিন্তু বিশ্বে এটা এখন খুবই ডিমান্ড। তাই বেশিরভাগ ভালো ক্লায়েন্ট পেতে হলে আপনাকে এই বিষয়ে জানতে হবে। কারণ তারা তাদের সফটওয়্যার ক্লাউড নির্ভর করে তৈরি করছে। যদি আপনি এ বিষয়ে দক্ষতা না রাখেন তাহলে তারা আপনাকে কাজ দিতে পারবে না।

আর আপনি যদি নিজে প্রোডাক্ট তৈরি করার কথা ভেবে থাকেন তাহলেও ক্লাউড আপনার জন্য জরুরী। কারণ এখানে আপনি এমনভাবে সফটওয়্যার তৈরি করতে পারবেন যেটা মান সম্পন্ন ও ব্যবসা সফল হবে। উপরেই উল্লেখ করেছি, গুগল, ফেসবুক কিভাবে তাদের সফটওয়্যার দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করছে। তাদের মত যদি কোন ভালো আইডিয়া আপনার মাথায় চলে আসে, তাহলে সেটা কম খরচে বাস্তবায়ন করে ইনভেস্টর জোগাড় বা নিজেই পরিচালনা করে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে ক্লাউডের সাহায্য নিতেই হবে, তা না হলে আপনি গতানুগতিক বিজনেস মডেলে লাভ করে কোম্পানি টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।

উপরে আমি যে কারণগুলো উল্লখে করলাম সেগুলো যাচাই করে বা চিন্তা করে আপনি নিজেই বিচার করতে পারেন যে আপনার ক্লাউড কম্পিউটিং এখনই শিখা প্রয়োজন নাকি আপনি বসে থাকবেন সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর মাথা চাপড়ানো পর্যন্ত।

ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে এতো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবার মত কোন ভালো প্রতিষ্ঠান নেই। এর কারণ, বিষয়টির গুরুত্ব ও ডিমান্ড আমরা বুঝতে পারছি না। আমাদের মধ্যে যারা এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে তারা আবার কিছুদিন পর বিদেশে চলে যাওয়ায় আমরা এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবার জন্য দক্ষ প্রশিক্ষকও পাই না। কিন্তু আপনাদের জন্য এটা একটা সুযোগ যে ডেভস্কীল থেকে এই বিষয়ে আমরা দক্ষ প্রশিক্ষক দিয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।

নিচের লিংকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন ও রেজিস্ট্রেশান করতে পারবেন।

AWS Solution Architect Associate with Advanced Level Learning

আমাদের কোর্সগুলো অনলাইনে হবে। অনেকে অনলাইনে কোর্স করতে ভয় পান। ভাবেন যে হয়ত ঠিকভাবে বুঝতে পারবেন না। কিন্তু বিষয়টি সঠিক নয়। যারা ল্যাবে এসে কোর্স করতে ইচ্ছুক হন, তারা ২-৩ ক্লাস পরে নিজেই আবার অনলাইনে চলে যান যখন তারা দেখেন যে আসা যাওয়ার ফলে সময় নষ্ট ছাড়া কোন লাভ হচ্ছে না। তাই আমাদের ল্যাব কোর্সগুলো শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পরায় আমাদের সেগুলো বাতিল করতে হয়েছে কোর্স চালু হওয়ার কিছু দিন পর। মাঝখান থেকে আমাদের কোর্সের টাইম মিলানোর ঝামেলায় পরতে হয়েছে অযথা। একারণে এবার আমার অনলাইনেই কোর্স করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের অনলাইন ক্লাসে কোন সমস্যা ছাড়াই শিখা সম্ভব যদি আপনার ২ মেগাবাইট ইন্টারনেট কানেকশন আর একটি চলনসই হেডফোন থাকে। আর বিদেশী ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে গেলে অনলাইনে মিটিং করার অভ্যাস এখন থেকে হয়ে গেলেই ভালো না?

কাজেই সুযোগ আপনার সামনে আর সেটা গ্রহণ করা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে। আমার মতে আমাদের ক্লাউড কম্পিউটিং কোর্স করার পর কারো বলার কোন সুযোগ থাকবে না যে সে এখান থেকে মূল্যবান কিছু শিখতে পারেনি। বরং আমরা মোটামুটি নিশ্চিত যে এটা এমন একটা কোর্স যেটা আমাদের দেশের অন্য যেকোনো ট্রেনিং কোর্সের থেকে আপনার জীবনে অনেকগুন বেশি মূল্য যোগ করবে এটা নিশ্চিতভাবে গ্যারান্টি দেয়া যায়।

মোঃ জালাল উদ্দিন,

প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, ডেভস্কীল.কম

Share with Your Friends