Go Back to All Articles আমরা কেন গরিব – পর্ব ১

নাকিবের (ছদ্মনাম) আজ ৭ম ইন্টারভিউ। সাত নম্বরটা আজ লাকি হওয়া খুবি দরকার তার জন্য। ইন্টারভিউ নিচ্ছেন কোম্পানির টিম লিড রফিক সাহেব। নাকিবের গায়ে কালো টিশার্ট, আর নীল জিন্স। বুকে লেখা থিঙ্ক ডিফারেন্ট। গেঞ্জিটা খুব লাকি মনে করে নাকিব।

কিছু প্রাথমিক কথা বলার পর…

রফিকঃ ঠিক আছে, আপনি আমার সাথে আসুন। আপনাকে কিছু সি# কোড লিখতে দিব।

নাকিবঃ স্যার, আমি তো সি# পারি না, জাভাতে কি লেখা যাবে?

রফিকঃ আপনার সিভিতে তো লেখা আপনি সি# জানেন। আর আমরা তো সার্কুলারে উল্লেখ করেছি যে আমরা সি# জানে এমন লোক খুজছি…

নাকিবঃ জি স্যার, সবাই বলে সার্কুলারে অনেক কিছুই থাকে কিন্তু সব পারতে হয় না, আর সবাই বলল সিভিতে বেশি লিখলে ডাক পাওয়ার চান্স বাড়ে।

রফিকঃ (কিছুটা বিরক্তি নিয়ে) সব পারতে হয় না ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে জাভা জেনে সি# এ অ্যাপ্লাই করবেন? আপনি সিভিতে ভুল তথ্য দিয়ে কেন আমাদের সময় নষ্ট করছেন।

নাকিবঃ সরি স্যার, আমাদের ইউনিভার্সিটিতে সি# শেখানো হয় না, কেবল জাভা শেখানো হয়।

রফিকঃ আপনার ইউনিভার্সিটিতে কি শেখানো হয় সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নয়, আমরা কি চাচ্ছি সেটা আপনাকে জানতে হবে। আপনি কিভাবে শিখবেন সেটা আপনার ব্যাপার। ইউনিভার্সিটিতে সি# শেখানো হয় না বলে কি কেউ সি# শিখছে না?

নাকিবঃ স্যার, ইউনিভার্সিটির বাইরে কোন অতিরিক্ত ট্রেনিং করার মত আর্থিক সামর্থ্য আমার ছিল না।

রফিকঃ তো, জাভার চাকরি খুঁজুন। এখানে কেন?

নাকিবঃ স্যার, জাভার চাকরি খুঁজেছি, কোন সার্কুলার পাচ্ছিনা, আর যা ২-১ টা পাই, সবাই অভিজ্ঞতা চায়, তাও অ্যাপ্লাই করেছি, কিন্তু কেউ ডাকেনি।

রফিকঃ দেখুন, এসব শুনে আমাদের কাজ নেই, আমাদের যে কাজের জন্য লোক দরকার তাদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। আপনি অনেক সময় নষ্ট করেছেন, এবার আপনি যেতে পারেন।

নাকিবঃ স্যার, চাকরিটা আমার ভীষণ দরকার। আপনি আমাকে ১ মাস সময় দিলে আমি সি# শিখে নিতে পারবো।

রফিকঃ দেখুন, এসব ফালতু কথা বলবেন না। আমাদের আর্জেন্ট লোক দরকার। ১ মাস তো দূরে থাক, ১ দিনও সময় দেয়া সম্ভব না। আপনার জন্য আমরা ক্লায়েন্ট হারাতে পারবো না। আর ১ মাসে যদি শিখে নিতে পারেন, তাহলে এতদিনে শিখলেন না কেন? ১ মাসে শিখে নিতে পারলে আবার ১ মাস পরে অ্যাপ্লাই করুন।

নাকিবঃ স্যার, আমি জানি আপনি বিরক্ত হচ্ছেন, আমি এত অনুরোধ করতাম না। আমার বাবা ১ বছর হল রিটায়ার করেছেন, আমাকে এখন সংসারের হাল ধরতে হবে, কিন্তু ৬ মাস হয়ে গেল পাশ করেছি, এখন চাকরি পাচ্ছি না। চাকরিটা না পেলে আমার আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে।

রফিকঃ দেখুন, আপনার সমস্যার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। বাইরে আরও যেসব ক্যান্ডিডেট অপেক্ষা করছে, তাদেরও আপনার মত সমস্যা আছে। হয়ত আপনার থেকে বেশি সমস্যা আছে, আর চাকরিটা তাদেরও খুব দরকার। কিন্তু সেখানে এমন কেউ আছে যে সি# জানে, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং জানে, তাহলে তাকে বাদ দিয়ে আপনাকে চাকরি দিব কোন যুক্তিতে? এটা কি তার প্রতি অবিচার হবে না?

নাকিবঃ (মাথা নেরে) জি স্যার, আপনি ঠিক বলেছেন। সরি স্যার, আপনার অনেক সময় নষ্ট করলাম। আমি তাহলে আসি স্যার।

রিফকঃ (দীর্ঘ শ্বাস ছেরে পিওনকে বললেন) পরবর্তী ক্যান্ডিডেটকে আসতে বল…

অফিস থেকে বের হয়ে নাকিবের চোখে পানি চলে আসলো। কান্না পাচ্ছে, কিন্তু কান্না করল না সে, শক্ত হতে হবে নিজেকে সান্ত্বনা দিল। কি করবে ভাবতে ভাবতে বাসে চড়ে বাসায় চলে আসলো সে।

নাকিবের বাসায় ৪ জন সদস্য। নাকিব, বাবা, মা আর ছোট বোন। নাকিবের বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে ৩ বছর আগে। নাকিবের বাবা সরকারি কর্মচারী ছিলেন। সৎ ছিলেন বলে তাদের অবস্থা কখনই খুব একটা ভাল ছিল না। পেনশনের এককালীন যা টাকা পেয়েছিলেন তা খরচ হয়ে গেছে বড় বোনের বিয়ের সময় যে সব দেনা করেছিলেন সেগুলো শোধ করতে। মাসিক যা পান, তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। তার উপর ছোট বোনের লেখাপড়া। ছেলে পাশ করে বের হলে সংসারের হাল ধরবে এই আশায় দিন গুনছিলেন বাবা মা। কিন্তু ৬ মাস পার হয়ে গেল চাকরীর খবর নেই। S.S.C, H.S.C দুটোতেই গোল্ডেন A+, B.Sc. তে ৩.৯৪ আর গোল্ড মেডেল পেয়েছে নাকিব। নাকিবের বাবা মনে করেন নাকিব ঠিকমত চেষ্টা করছে না, নাহলে এত ভাল রেজাল্ট করার পর চাকরি না হয় কারো? পারতপক্ষে তাই বাবাকে এড়িয়ে চলে নাকিব, মার কাছে হাত খরচের টাকা চায়। মাঝে মাঝে মেলে আর মাঝে মাঝে পাশের ঘর থেকে বাবার উত্তেজিত চেঁচামেচি শোনা যায়, টাকা মেলে না।

আর কতই বা করবেন তারা। নিজেরা না খেয়ে থেকেছেন, কিন্তু ছেলেমেয়েদের ভরপেট খাইয়েছেন। নিজেরা জামাকাপড় কেনেননি, কিন্তু ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় কোন কমতি হতে দেননি। সারা জীবনের আয় তাদের লেখাপড়ার পিছনে বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন বুড়ো বয়সে যখন প্রয়োজন তখন ফল পাচ্ছেন না।

দরজায় বেল দিতে ছোট বোন দরজা খুলে দিল হাসি মুখে, কিন্তু নাকিবের মুখের দিকে তাকিয়ে যা বুঝার বুঝে গেল। দরজা খোলা রেখে চলে গেল সে। নাকিব ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। ভাগ্য ভাল বাবা বাসায় নেই। হাত মুখ ধুয়ে বিছানায় শুয়ে পরল সে। বিকাল ৪ টা বাজে, মা এসে দুপুরের খাবার জন্য ডাকলেন, উঠল না নাকিব, বলল খাবে না।

বিছানায় শুয়ে শুয়ে নাকিব চিন্তা করতে লাগলো সমস্যা কোথায়, কেন তার সাথেই এমন হোল। মনে মনে রাগ হতে লাগলো তার। এত টাকা খরচ করে এত পরিশ্রম করে ভাল রেজাল্ট করে লাভ কি হোল তার যদি চাকরিই না পাওয়া যায়। চাকরি নাই জেনেও স্যাররা জাভা কেন শেখাল সি# কেন শেখাল না তার জন্যও রাগ হতে লাগলো তার।

ফোনটা হাতে নিয়ে বন্ধু মাসুদকে একটা ফোন দিল নাকিব। কিছুদিন হোল চাকরি পেয়েছে সে। ২ বার রিং হতেই ফোন ধরল মাসুদ।

মাসুদঃ হ্যাঁ দোস্ত, কেমন আছিস। অনেকদিন কোন খোঁজ খবর নাই…

নাকিবঃ ভাল না, আজকে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম, চাকরিটা হোল না।

মাসুদঃ কেন? প্রশ্ন কঠিন ছিল?

নাকিবঃ না, সি# এর ইন্টারভিউ, আমি তো সি# জানি না, কোড করতে দিয়েছিল।

মাসুদঃ আরে গাধা, এভাবে উল্টাপাল্টা এপ্লাই করলে হবে…?

নাকিবঃ শোন, ইন্টারভিউতে অনেক উপদেশ শুনে এসেছি, আর উপদেশ শোনাস না আমাকে, কি করলে চাকরি পাবো তাই বল।

মাসুদঃ সেটা তো ২ বছর ধরেই বলে আসছি, কিন্তু তুই আমার কথা শুনেছিস কখনো?

নাকিবঃ কি করবো, গোল্ড মেডেল না পেলে বাবা আমাকে আস্ত রাখতো?

মাসুদঃ তাহলে কি আর করা, এখন ট্রেনিং কর।

নাকিবঃ টাকা নেই, বাবা টাকা দিবে না।

মাসুদঃ এক কাজ কর, তোর CGPA তো অনেক ভাল, স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে মাস্টার্স করতে চলে যা।

নাকিবঃ তাহলে সংসার চলবে কিভাবে? বাবা রিটায়ার করেছে।

মাসুদঃ ২ বছর আঙ্কেল চালিয়ে নিতে পারবে না?

নাকিবঃ না, এখনই চলে না আর ২ বছর।

মাসুদঃ ভার্সিটিতে ফ্যাকাল্টি হয়ে যা।

নাকিবঃ একজন নিয়েছে, ফরিদ ঢুকে গেছে, ঐ যে ৩.৯৮ ফরিদ।

মাসুদঃ অন্য ভার্সিটিতে এপ্লাই কর…

নাকিবঃ সার্কুলার নেই।

মাসুদঃ সময় তো লাগবে, চাকরি তো আর রেডি থাকে না। সুযোগের অপেক্ষায় থাক।

নাকিবঃ আর পারছি না। ৬ মাস হয়ে গেছে। আচ্ছা তোর কম্পানিতে আমাকে নিবে না?

মাসুদঃ শোন, এই ফিল্ডে স্কিল না থাকলে নিজের ছেলেকেও চাকরি দেয় না সাধারণত। শোন আঙ্কেল কে বুঝা, টাকা মেনেজ কর, ট্রেনিং কর, নিজে নিজেও পারলে শিখ। ধৈর্য ধর।

(রাতে খাবার টেবিলে, অনেক সাহস করে কথাটা তুলল নাকিব…)

নাকিবঃ বাবা, শুধু রেজাল্ট দিয়ে চাকরি হচ্ছে না, ট্রেনিং করা লাগবে।

বাবাঃ (উত্তেজিত) কি! এই নাকিবের মা, শুনেছ তোমার ছেলের কথা? কলুর বলদের মত সারা জীবন খেটে লেখাপড়া করালাম এখন কোথায় উপার্জন করবে, আর বলে কিনা আরও টাকা দাও।

নাকিবঃ এত বছর এত টাকা খরচ করে এখন আর কয়টা টাকার জন্য চাকরি পাচ্ছি না, তাহলে লাভ কি এত কিছুর…

বাবাঃ কেন রাশেদ চাকরি পায়নি, ওর তো ট্রেনিং করা লাগেনি?

নাকিবঃ আমি যে গোল্ড মেডেল পেয়েছি, ও তো পায়নি।

বাবাঃ তর্ক করবি না, নিজের মুরদ নেই চাকরি ধরার সেটা বল। সারাদিন ইন্টারভিউ এর নাম করে আড্ডা মেরে বাড়ি ফিরিস, আমি জানি না।

নাকিবঃ বাবা তুমি মিথ্যা অভিযোগ করছ…

বাবাঃ (উত্তেজিত) কি! আমি মিথ্যা বলি? এত বড় সাহস!

নাকিব খাবার টেবিল থেকে রাগ করে উঠে গেল।

(৭ দিন পর)

মা নাকিবের কাছে এসে তাকে ৫ হাজার টাকা দিলেন।

নাকিবঃ বাবা টাকা দিয়েছে? কিন্তু আমার তো ১৫ হাজার লাগবে…

মাঃ না, আমি আমার বালা বন্ধক রেখে এই ৫০০০ টাকা এনেছি, আর তো দিতে পারবো না বাবা। তোর বাবা কোন টাকা দিবে না তুই তো জানিস।

নাকিব মন খারাপ করে টাকাটা নিল।

মাসুদ নাকিবকে যে ট্রেনিং সেন্টারের কথা বলেছিল সেখানে অনেক খরচ। প্রতি কোর্স ১৫,০০০-২০,০০০। নাকিব তাই খুজে পেতে একটা অন্য ট্রেনিং সেন্টার বের করল। ৫০০০ টাকায় ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখায়। ভর্তি হয়ে গেল নাকিব।

ক্লাস করল মন দিয়ে, প্রজেক্টও করল। কিন্তু মনের মধ্যে এখন সাহস আসছে না। মাসুদকে ফোন দিল নাকিব।

মাসুদঃ দোস্ত কি খবর?

নাকিবঃ দোস্ত কোর্স তো করলাম, কিন্তু ভরসা তো পাই না।

মাসুদঃ কি কোর্স করলি?

নাকিবঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। অন্য একটা ট্রেনিং সেন্টার থেকে।

মাসুদঃ কেন? আমি যেটা দিয়েছিলাম।

নাকিবঃ ওখানে অনেক দাম, আর সব আলাদা আলাদা শেখায়। শিখতে গেলে ৪-৫ টা কোর্স করা লাগবে, এত টাকা মেনেজ করতে পারিনি।

মাসুদঃ তোর আর জীবনে শিক্ষা হবে না।

নাকিবঃ তোর জন্য বলা সহজ, বাবার টাকা আছে, চিন্তা নাই কোন। আমার জন্য এত সহজ না বুঝলি।

মাসুদঃ বুঝলাম, কিন্তু এমন না যে আমার বাবার অনেক টাকা। আমার বাবাও চাকরি করে, কিন্তু আমার বাবা ঠিকমত তার প্লান করেছে। আমাকে আমার মত পড়তে দিয়েছে। ট্রেনিং এর জন্য কষ্ট করেই টাকা জোগাড় করতে হয়েছে আমার বাবার। জীবনে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে জীবন নষ্ট হয়।

নাকিবঃ আমার বাবাকে আমি বুঝাতে পারি না, তিনি বুঝতে চান না।

মাসুদঃ হুম, থাক মন খারাপ করিস না, তোর চেষ্টা তুই করে যা, কপালে থাকলে একদিন হবে। তবে এখন থেকে শেখার পিছনে সময় দে।

ঠিক আছে বলে ফোন রেখে দিল নাকিব।

এরপর কি হয়েছে, আমরা জানি না। হয়ত নাকিব একটা চাকরি পেয়েছে, হয়ত পায়নি। হয়ত পরিশ্রম করে নিজেকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে পেরেছে, হয়ত পারে নি। এভাবে অল্প একটুর জন্য অনেকেই জীবনে যতটা অর্জন করা সম্ভব ছিল ততটা অর্জন করতে পারে না। অনেক মেধা হারিয়ে যায় কোন কারণ ছাড়া, শুধু মাত্র কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে।

ক্যারিয়ারে সফলতা পেতে হলে ঘোরের মধ্যে থাকলে চলবে না। কিভাবে সফল হওয়া যায়, কোন পথে হাঁটলে সফল হওয়া যাবে সেটা জেনে বুঝে সেই পথে হাঁটতে হবে। পরিবার থেকেও থাকতে হবে সমর্থন। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির গণ্ডি পার করানোর পর চাকরী পূর্ববর্তী সময়ে এসে অভিভাবকরা হাত গুটিয়ে নেন। এর কারণে সারা জীবনের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আর্থিক বিনিয়োগ শেষ পর্যন্ত বিফলে যায়। পাস করার সাথে সাথে সংসারের দায়িত্ব ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া, চাকরী পাবার সাথে সাথে বিয়ে করিয়ে দেয়ার ব্যাপারে অভিভাবকরা যে চাপ সৃষ্টি করেন, তার বলি হতে হয় অনেক মেধাকে। একটু সময় নিয়ে, প্রস্তুতি নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারলে যেখানে অনেক সুন্দর একটি সফল জীবন পাওয়া সম্ভব হত, সেখানে তাড়াহুড়ো করে দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়ার কারণে তৈরি হচ্ছে ভবিষ্যতের হেরে যাওয়া প্রজন্ম ও অভিভাবক। এইভাবে সফলতাকে গলা টিপে মেরে ফেলার কারণে আমরা থেকে যাই গরীব। নাকিব যদি ইউনিভার্সিটিতে কিভাবে পড়তে হবে সেটা নিজের ইচ্ছা মত করতে পারত, পাস করার পর প্রয়োজন মত ভালো ট্রেনিং নেবার জন্য পরিবার থেকে সাহায্য পেত, ও সময় নিয়ে নিজেকে তৈরি করে ইন্টারভিউতে যাবার সময় পেত তাহলে তাকে এত হতাশায় ভুগতে হত না, এতবার বিফল হতে হত না। অভিভাবকদের মতামত যেমন গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে তেমনি একজন শিক্ষার্থীর নিজের পছন্দ অপছন্দর বিষয়ে মতামতকেও অভিভাবকদের গুরুত্ব দিতে হবে। যুগ বদলায়, অভিভাবকদের অভিজ্ঞতা যেমন মূল্যবান, নতুন যুগের নতুন চ্যালেঞ্জ কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে, সেটাও নতুনদেরই ভালোভাবে জানার কথা। তাদের মতামতের তোয়াক্কা না করলে ভুল হবেই। তবে এই সব কথা অভিভাবকরা বুঝতে না চাইলে তাদের সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে। মাথা গরম করা যাবে না, কারণ শেষ পর্যন্ত তাদের সমর্থন আর দোয়া নিয়েই আপনাকে সফল হতে হবে।

আশা করি এই ঘটনা থেকে আপনি ও আপনার অভিভাবকরা ক্যারিয়ারের ভুলগুলো সম্পর্কে সতর্ক হবেন।

(বিঃদ্রঃ এখানে জাভা ও সি# এর গুনগত মানের কোন তুলনা করা হয়নি, কেবল ফ্রেশারদের জাভার জব বাংলাদেশে কম এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে, আর সেটাও আসল উদ্দেশ্য নয়। এখানে জাভা ও সি# এর বদলে অন্য যেকোনো ল্যাঙ্গুয়েজ উদাহরণ হতে পারে)

মোঃ জালাল উদ্দিন,

প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, ডেভস্কীল.কম

Share with Your Friends