Go Back to All Articles বিভিন্ন কমন প্রশ্ন ও উত্তর

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকে। এর মধ্যে কিছু প্রশ্ন বারবার ঘুরে ফিরে আসে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এই পোস্টে লিস্ট করা থাকবে। এই পোস্টে ক্রমাগত প্রশ্ন উত্তর যোগ করা হবে।

প্রশ্নঃ কোন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেমন জাভা বা পাইথনের জব মার্কেট ডিম্যান্ড কেমন দেশে?

উত্তরঃ জব ডিম্যান্ড সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়। জব ডিম্যান্ড কেমন এটা আপনি নিজে নিজে বের করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কেবল জব সাইটে কিছু সময় দিতে হতে। কয়েক মাস জব সাইটে চোখ রাখলে আপনি বুঝতে পারবেন কোন ধরণের জব বেশি। অনেকেই এই কাজটি না করে অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করে, ভাবে এতে সময় বাঁচবে। এখানে আপনার সময় দেয়া উচিৎ। কারণ এর মাধ্যমে আপনি কেবল জব ডিম্যান্ড বুজবেন এমন না, সেলারি রেঞ্জ কেমন, কি কি স্কিল দরকার হয়, এই বিষয়ে আপনার পরিষ্কার ধারণা হবে। অন্য কাউকে যদি আপনি প্রশ্ন করেন এবং তার উত্তরে চোখ বন্ধ করে নির্ভর করেন আর নিজে একটু কষ্ট করে জব সাইটে না যান, তার মানে আপনি আসলে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে রাজি নন। কাজেই জব সাইটে যান এবং নিজে যাচাই করুন।

প্রশ্নঃ আমি প্রোগ্রামিং শিখতে চাচ্ছি, কিন্তু কোন গাইডলাইন পাচ্ছি না। আমি কিভাবে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু করতে পারি?

উত্তরঃ আপনাকে প্রথমে একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে এবং সেটা ভালো মত আয়ত্ত করতে হবে। আমার সাজেশন হবে সি অথবা সি++ দিয়ে শুরু করা। পাইথন বা অন্য ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করা যায়। তবে সি/সি++ দিয়ে শুরু করলে আপনি বিগিনার হিসাবে অনেক অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন।

প্রশ্নঃ আমি নন সিএস ব্যাকগ্রাউন্ডের। আমি কি প্রোগ্রামিং শিখে এই ফিল্ডে ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারবো?

হ্যাঁ পারবেন। অনেকেই নন সিএস থেকে এই ফিল্ডে ক্যারিয়ার তৈরি করেছে এবং ভালো করেছে। কেবল দেশে নয় বিদেশেও অনেকে এটা করেছে। তবে আপনাকে এটা মাথায় রাখতে হবে। নন সিএস হওয়া আপনার জন্য বড় বাঁধা নয়, বরং আপনার এই বিষয়ে শেখা ও লেগে থাকার আগ্রহই বড় বাঁধা। কাজটি সহজ নয় এবং সময় সাপেক্ষ। কাজেই এটাকে ২-৩ মাস একটু চেষ্টা করেই হাজার হাজার টাকা আয় করার পথ ভাবলে ভুল করবেন। আপনাকে বুঝতে হবে যে এই কাজটি করতে হলে আপনাকে সিএস এর শিক্ষার্থীদের থেকেও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। এখানে যারা ননসিএস থেকে এসে ভালো করেছে, তারা বছরের পর বছর সাধনা করে সেটা অর্জন করেছে। কাজেই লেগে থাকতে হবে এবং ধাপে ধাপে একটু একটু করে আগাতে হবে। সময়ে আপনি অবশ্যই পারবেন ইন শা আল্লাহ্‌, যদি লেগে থাকেন।

প্রশ্নঃ সফটওয়্যার লাইনে জব করার জন্য সিজিপিএ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তরঃ বর্তমান দুনিয়াতে সিজিপিএ এর গুরুত্ব সব ফিল্ডেই কমে যাচ্ছে। তবে এখনো এটার গুরুত্ব আছে। অযথা সিজিপিএ খারাপ করা কখনোই ঠিক নয়। একটু সাবধান থাকলে ও খামখেয়ালি না করলে সহজে মোটামুটি ভালো সিজিপিএ রাখা যায়। তবে আপনাকে যেটা মাথায় রাখতে হবে সেটা হল, আপনার স্কিল সবচেয়ে বড় বিষয়। সিজিপিএ খুব বেশি না হলেও আপনি এই ফিল্ডে ভালো করতে পারবেন, কিন্তু সেটা যেন আপনার সিজিপিএ কমানোকে উৎসাহিত না করে। কারণ মনের মধ্যে এটা ঢুকে গেলে সিজিপিএ খারাপ হবে, কিন্তু আপনার স্কিল বাড়বে না। বরং স্কিল বাড়াতে গিয়ে যদি সিজিপিএ কমে সেটা কমুক। তবে খুব খারাপ হলে সমস্যা হতে পারে। অনেক কোম্পানি জবের ক্ষেত্রে সিজিপিএ দেখে এবং খুব খারাপ হলে এপ্লাই করতে দিবে না। বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে চাইলেও ভবিষ্যতে সমস্যা হবে। ভবিষ্যতে কোথায় সিজিপিএ দরকার পরে বলা যায় না, তাই এভারেজ সিজিপিএ ধরে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

প্রশ্নঃ আমি মাঝপথে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। এখন আমি সফটওয়্যার লাইনে ক্যারিয়ার তৈরি করতে চাই। সার্টিফিকেট না থাকলে আমার কি সমস্যা হবে?

উত্তরঃ সফটওয়্যার লাইনে জবের জন্য সার্টিফিকেট খুব একটা দেখা হয় না। এখানে দেখা হয় আপনার স্কিল আছে কিনা। কিছু কোম্পানি সার্টিফিকেট দেখতে পারে। তবে সবাই দেখে না। যদিও জব পোস্টে গ্র্যাজুয়েট হতে হবে এমন লেখা থাকে। তবে এমন নয় যে স্কিল ভালো থাকার পরও আপনি কোন ভাবেই জব পাবেন না। অনেক জায়গায় হয়ত আপনাকে চান্স দিবে না, তবে আবার অনেকেই আছে যারা চান্স দিবে। কিন্তু সেটা তো গেল সার্টিফিকেট এর সমস্যা। এখন দরকার স্কিল। সেটা অর্জন সহজ কাজ নয়। বিশেষ করে যদি আপনার সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে আপনার আরও বেশি স্কিল থাকতে হবে, সেই গ্যাপ পূরণ করার জন্য। জবদাতাকে আপনার স্কিল দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হবে।

প্রশ্নঃ সব জব পোস্টে অভিজ্ঞতার কথা লেখা থাকে। ফ্রেশারদের জন্য কি তাহলে কোন জব নেই?

উত্তরঃ ফ্রেশারদের জন্য জব আছে। তবে বেশিরভাগ সময় রেফারেন্সের মাধ্যমে ফ্রেশার নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। তবে জব পোস্ট ও দেখা যায় মাঝে মাঝে। এজন্য রেগুলার জব সাইটে চোখ রাখতে হবে। ফেসবুক গ্রুপেও অনেক জব পোস্ট আসে যেখানে ফ্রেশার নেয়া হয়। ফ্রেশার হিসাবে জব পেতে ইউনিভার্সিটি লাইফে সিনিয়র ভাইদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। যদি প্রোগ্রামিং এ ভালো হন, তাহলে সিনিয়র ও শিক্ষকরা জবের জন্য ডাকে। কাজেই এমন স্কিল তৈরি করুন যাতে ইউনিভার্সিটিতে সবাই আপনাকে ভালো প্রোগ্রামার হিসাবে একনামে জানে। এতে জব পাওয়া সহজ হবে।

প্রশ্নঃ অনেক জায়গায় এপ্লাই করেছি কিন্তু ইন্টারভিউ কল আসছে না কেন?

উত্তরঃ আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। সেই সাথে নিজেকে সংশোধন করতে হবে। আপনি হয়ত কিছু ভুল করছেন যার কারণে কল পাচ্ছেন না। অনেক সময় স্কিল থাকলেও কল আসে না, কারণ আপনার সিভি হয়ত ঠিকভাবে লেখা হয়নি। এই বিষয়ে আমরা বিভিন্ন টিপস দিয়ে থাকি এবং এই ব্লগে কিছু পোস্ট আছে, সেগুলো দেখতে পারেন।

মোঃ জালাল উদ্দিন

প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, ডেভস্কীল.কম